পদ্মা সেতু তৈরিতে মানুষের মাথা লাগার গুজব কেন ছড়ালো?
পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের জন্য মানুষের মাথা লাগবে বলে যে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে, তার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ। http://biastonu.com/1TTg
পদ্মাসেতুর প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া একটি গুজবের বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন থাকতে বলা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে বলে একটি মহল সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
http://biastonu.com/1TTg
সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি তুলে ধরে ঐ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করা হয় যে ব্রিজ নির্মাণে মানুষের মাথা প্রয়োজন হওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি গুজব।পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ঐ অঞ্চলের কাছে বেশ কয়েকটি এলাকায় বিভিন্ন বয়সী মানুষ অপহৃত হচ্ছে বলেও গুজব ছড়িয়ে পড়ায় কিছু এলাকায় মানুষের মধ্যে ভিত্তিহীন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বলে দেশের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবরও বের হয়।তবে কোনো এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকেই কোনো অপহরণের খবর পাওয়া যায়নি।তাহলে কেন এমন একটি ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়ে পড়লো যার কারণে পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই অপপ্রচারের প্রতিবাদ করতে হলো?বাংলাদেশে সেতু নির্মাণ বা এরকম বড় কোন স্থাপনা নির্মাণ কাজে নরবলির গুজব নতুন নয়।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী মনে করেন আমাদের দেশের শাসনব্যবস্থার ঐতিহাসিক পটভূমি এবং গ্রামাঞ্চলের মানুষের চিন্তাধারা পর্যবেক্ষণ করলেই এর কারণ বোঝা সম্ভব।
http://biastonu.com/1TTg
"ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেখবেন আমাদের এই অঞ্চল বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন রাজা, সম্রাটদের মত বিভিন্ন ধাঁচের শাসকদের অধীনে ছিল।"
মিজ. চক্রবর্তী বলেন নানা কিংবদন্তীমূলক কাহিনী, আবহমান কাল ধরে চলে আসা জনশ্রুতি এবং স্থানীয় সংস্কৃতিতে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন গল্পের ওপর বিশ্বাস করার প্রবণতা মানুষের মধ্যে প্রবল।
"কথিত আছে, ১৫৮০ সালের দিকে মৌলভীবাজারে কমলার দীঘি তৈরি করার সময় দীঘিতে যখন পানি উঠছিল না, তখন রাজা স্বপ্ন দেখেন যে তার স্ত্রী দীঘিতে আত্মবিসর্জন দিলে পানি উঠবে এবং পরবর্তীতে রাজার স্ত্রী আত্মাহুতি দেয়ার ফলেই ঐ দীঘিতে পানি ওঠে।"
দিনাজপুরের রামসাগর তৈরিতেও একই ধরণের কিংবদন্তী প্রচলিত রয়েছে বলে জানান মিজ. চক্রবর্তী।মিজ. চক্রবর্তী বলেন, "এসব ঘটনার কোনো প্রামাণিক দলিল বা সুনিশ্চিত ঐতিহাসিক প্রমাণ না থাকলেও শত শত বছর ধরে মানুষের মুখে মুখে চলে আসার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে এধরণের গল্পের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়।"
আবার ইতিহাস বিবেচনা করলে দেখা যায়, পৃথিবীর প্রায় সব এলাকার শাসকরাই তাদের প্রজাদের ওপর নিষ্ঠুর অত্যাচার করেছেন। শাসকদের সেসব অত্যাচারের কাহিনীও কালের বিবর্তনে মানুষের মুখে মুখে বিভিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়ে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন হলেও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে বিদ্যমান থাকায় সরলমনা মানুষ সেগুলো বিশ্বাস করে।
সফলভাবে ব্রিজ তৈরি করতে পিলারের নিচে মানুষের মাথা দিতে হবে - আবহমান কাল থেকে মানুষের মধ্যে প্রচলিত এই কুসংস্কার নিয়ে বাংলা সাহিত্যে বেশকিছু গল্পও রয়েছে।
মিজ. চক্রবর্তী বলেন, "প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে যেসব গল্প শুনে আসে, কোনো ধরণের যাচাই ছাড়া সেগুলো বিশ্বাস করার প্রবণতার কারণেই এই প্রযুক্তির যুগেও সেসব গল্প সত্যি বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।"
'সমাধান: জনগণের কাছে তথ্যপ্রবাহকে অবারিত করা'
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে মানুষের মাথা লাগবে বলে একটি মহল সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
http://biastonu.com/1TTg
সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি তুলে ধরে ঐ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করা হয় যে ব্রিজ নির্মাণে মানুষের মাথা প্রয়োজন হওয়ার বিষয়টি পুরোপুরি গুজব।পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য ঐ অঞ্চলের কাছে বেশ কয়েকটি এলাকায় বিভিন্ন বয়সী মানুষ অপহৃত হচ্ছে বলেও গুজব ছড়িয়ে পড়ায় কিছু এলাকায় মানুষের মধ্যে ভিত্তিহীন আতঙ্ক তৈরি হয়েছে বলে দেশের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবরও বের হয়।তবে কোনো এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকেই কোনো অপহরণের খবর পাওয়া যায়নি।তাহলে কেন এমন একটি ভিত্তিহীন গুজব ছড়িয়ে পড়লো যার কারণে পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এই অপপ্রচারের প্রতিবাদ করতে হলো?বাংলাদেশে সেতু নির্মাণ বা এরকম বড় কোন স্থাপনা নির্মাণ কাজে নরবলির গুজব নতুন নয়।রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের অধ্যাপক সুস্মিতা চক্রবর্তী মনে করেন আমাদের দেশের শাসনব্যবস্থার ঐতিহাসিক পটভূমি এবং গ্রামাঞ্চলের মানুষের চিন্তাধারা পর্যবেক্ষণ করলেই এর কারণ বোঝা সম্ভব।
"ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেখবেন আমাদের এই অঞ্চল বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন রাজা, সম্রাটদের মত বিভিন্ন ধাঁচের শাসকদের অধীনে ছিল।"
মিজ. চক্রবর্তী বলেন নানা কিংবদন্তীমূলক কাহিনী, আবহমান কাল ধরে চলে আসা জনশ্রুতি এবং স্থানীয় সংস্কৃতিতে প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন গল্পের ওপর বিশ্বাস করার প্রবণতা মানুষের মধ্যে প্রবল।
'সমাধান: জনগণের কাছে তথ্যপ্রবাহকে অবারিত করা'
সুস্মিতা চক্রবর্তীর মতে, "এ ধরণের গুজব যেন না ছড়িয়ে পড়ে তা নিশ্চিত করার একমাত্র পদ্ধতি, ব্রিজ নির্মাণের খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে প্রকল্প পরিচালকের পক্ষ থেকে সাধারণ মানুষকে বিস্তারিত জানানো।"
"জনগণের কাছে তথ্যপ্রবাহকে যতটা অবারিত করা হবে, সাধারণ মানুষকে ধোঁয়াশা থেকে মুক্ত করার জন্য যতবেশি প্রয়াস নেয়া হবে, ততই এধরণের গুজব তৈরি হওয়া এবং ছড়িয়ে পড়া কমবে।"
এছাড়া বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে সব বিষয়েই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হওয়ার প্রবণতা থাকার কারণেও এধরণের গুজব তৈরি হয় বলে মনে করেন মিজ. চক্রবর্তী।"পদ্মা সেতুর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিতর্ক সবসময়ই ছিল। কাজেই এর নির্মাণকাজ নানভাবে পন্ড করার চেষ্টা করে কোনো একটি মহল রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের চেষ্টা করতেই পারে; বিশেষ করে যখন আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে সব বিষয়কে কেন্দ্র করেই বাজে রাজনৈতিক লড়াই তৈরি করার প্রবণতা রয়েছে।"
http://biastonu.com/1TTg
"জনগণের কাছে তথ্যপ্রবাহকে যতটা অবারিত করা হবে, সাধারণ মানুষকে ধোঁয়াশা থেকে মুক্ত করার জন্য যতবেশি প্রয়াস নেয়া হবে, ততই এধরণের গুজব তৈরি হওয়া এবং ছড়িয়ে পড়া কমবে।"
http://biastonu.com/1TTg
No comments:
Post a Comment